মেডিভয়েস রিপোর্ট: স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই হত্যাকাণ্ডের ৮ বছর পূর্ণ হয়েছে।
২০১২ সালের ২৩ অগাস্ট রাতে রাজধানীর মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আবাসিক এলাকায় নিজের বাসায় খুন হন তিনি।
দীর্ঘ আট বছরেও ডা. নিতাই হত্যা মামলার বিচার কাজ শেষ না হওয়ায় হতাশা বাড়ছে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে।
নিতাইয়ের মেজো ভাই গোপাল কৃষ্ণ দত্ত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিচারের আশা আমরা ছেড়েই দিয়েছি। মামলার বিষয়ে এর আগে অনেককে বলেছি, বাবাও খুব বলতেন। কিন্তু এখন নিতাইয়ের মৃত্যু দিবসে নিভৃতে চোখের জল ফেলা ছাড়া আমাদের কিছুই করার নেই।’
এ প্রসঙ্গে ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের পেশকার মো. শাহ আলম জানান, গত ৬ জানুয়ারি এ মামলায় সর্বশেষ সাক্ষ্য দেন এ মামলার প্রথম তদন্ত কমকর্তা পুলিশ পরিদর্শক এমদাদুল ইসলাম তৈয়ব। এরপর দ্বিতীয় তদন্ত কমকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গাজী আতাউর রহমানের সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছিলেন বিচারক। কিন্তু তিনি আদালতে হাজির না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
তিনি বলেন, সাক্ষ্যের জন্য পুলিশ সদরদপ্তদরের মাধ্যমে আতাউর রহমানকে সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মহামারীর কারণে এরপর আদালত বন্ধ হয়ে যায়। আদালত খোলার পর এখন এ মামলার তারিখ পড়েছে আগামী ১ সেপ্টেম্বর।
জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের রাতে দোতলা ওই বাড়িতে ডা. নিতাইয়ের সঙ্গে ছিলেন বৃদ্ধা মা। আর স্ত্রী লাকী চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রামে। হত্যাকাণ্ডের পরদিন নিতাইয়ের বাবা বনানী থানার হত্যা মামলা দায়ের করেন। ছয় মাসের তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গাজী আতাউর রহমান ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি চুরি, চোরাই মাল গ্রহণ ও হত্যার অভিযোগ এনে ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
সেখানে বলা হয়, চুরির সময় দেখে ফেলায় ওই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়। আসামিরা তার বাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকা আর দুটি স্বর্ণের বালা নিয়ে যায়।
পুলিশের দাবি, নিতাই হত্যার আসামিরা ‘পেশাদার চোর’। আর মামলার অন্যতম আসামি অরুণ ছিলেন নিহত চিকিৎসক নিতাইয়ের গাড়িচালক।
মামলার আসামিরা হলেন- রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, সাঈদ ব্যাপারী ওরফে আবু সাঈদ মো. হোসেন মিজি, ফয়সাল, মাসুম ওরফে পেদা মাসুম, মো. আবুল কালাম ওরফে পিচ্চি কামাল ও সাইদুল। তারা সবাই কারাগারে রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রথম পাঁচজন সাগর-রুনি হত্যা মামলাতেও গ্রেপ্তার আছেন।
সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুব আলম রাষ্ট্রপক্ষে নিতাই হত্যা মামলার আইনজীবী হিসাবে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন।