মেডিভয়েস রিপোর্ট: জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় সিজোফ্রেনিয়া এবং উদাসীনতা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। ব্রেইন জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বিভিন্ন মানসিক রোগের বেশ কিছু সম্ভাব্য চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়, সিজোফ্রেনিয়া মূলত একটি স্নায়ু-মনোরোগ যা ব্যক্তির আচরণ এবং কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন লক্ষণ দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় ১% মানুষকে প্রভাবিত করে রোগটি। এর সাধারণ লক্ষণ হলো উদাসীনতা এবং প্রেরণার অভাব, যার কোনো কার্যকরী চিকিৎসা নেই।
গবেষণায় একটি পুরস্কার ভিত্তিক খেলার সময় স্নায়বিক সক্রিয়তার বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়।
চ্যারিটি বার্লিন নামক একটি বেসরকারি সংস্থার গবেষকদের সহযোগিতায় জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেনেভা হাসপাতালের এক দল গবেষক গবেষণাটি পরিচালনা করেন।
এতে দেখা গেছে, সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্ক সূক্ষ্মভাবে কাজ করতে না পারায় তারা বিভিন্ন স্তরের পুরস্কারের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না। এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজ করার প্রেরণাকে বাধাগ্রস্ত করে।
গবেষকরা ১৫২ জন স্বেচ্ছাসেবকের নাম নথিভুক্ত করেছেন। এর মধ্যে ৮৬ জন সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত এবং ৬৬ জন বয়স ও লিঙ্গ ভেদে একই। একটি এমআরআই স্ক্যানারে এই খেলার সময় তাদের মস্তিষ্কের কাজ পর্যবেক্ষণ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে জেনেভা হাসপাতাল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের অধ্যাপক স্টেফান কাইজার বলেছেন, সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া, চাকরি করা বা সমাজের মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সমস্যায় পড়েন, যার মূল কারণ হলো—‘প্রেরণার অভাব' (ল্যাক অব মোটিভেশন)
গবেষণায় দেখা গেছে, উদাসীনতা এবং প্রেরণার অভাব বস্তুগত পৃথিবীতে কম দৃশ্যমান। তবে দৈনন্দিন জীবনে এই সমস্যা বোঝা স্বরূপ। কাইজার বলেন, অ্যান্টিসাইকোটিকগুলির হ্যালুসিনেটরি ঘটনা এবং বিভ্রমের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব না থাকার কারণে রোগটির কার্যকরী কোনো চিকিৎসা নেই। তার মতে, খেলার ফলাফলগুলি বেশ কয়েকটি থেরাপিউটিক বিষয় সামনে আনে, যা সুনির্দিষ্টভাবে স্নায়বিক সক্রিয়তার ত্রুটিকে নিশ্চিত করে।
যদিও মনোরোগ চিকিৎসায় ‘নন-ইনভেসিভ ব্রেন স্টিমুলেশন’ নামে একটি কৌশলকে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে ব্যাখ্যা করেছেন গবেষক মারিয়া কালিউজনা। তবে এই কৌশল বেশ জটিল এবং এটি বাস্তবায়নের আগে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে বৈধতাপ্রাপ্ত হতে হবে বলেও জানান তিনি।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
এনএএন/