মেডিভয়েস রিপোর্ট: দেশে প্রায় ৩৬ হাজার চিকিৎসক নিবন্ধন নবায়ন ছাড়াই স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত রয়েছেন। কতজন ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে নিবন্ধন করেছেন, তার সঠিক তথ্য নেই বিএমডিসির কাছে। আবার কোনো নিবন্ধন ছাড়াই কত মানুষ চিকিৎসক পরিচয়ে কাজ করছেন, তাও তারা জানে না।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সংস্থাটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
বিএমডিসির বর্তমান অবস্থা সাংবাদিকদের জানাতে আয়োজিত সভায় প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী স্বীকৃতি (প্রতিষ্ঠানের) প্রদান কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার ডা. মো. লিয়াকত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিএমডিসির সভাপতি বলেন, চিকিৎসকদের পেশাগত অসদাচরণ, চিকিৎসায় অবহেলা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা, চারিত্রিক দোষ—এসব নিয়ে অভিযোগ গ্রহণ, তদন্ত, শুনানি ও নিষ্পত্তি করা বিএমডিসির অতি জনগুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল কাজ। ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিএমডিসির কাছে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ১৪৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৭১টি অভিযোগের, ২৭টি অভিযোগের তদন্ত বা প্রতিবেদন লেখার কাজ চলছে এবং ৪৯টি অভিযোগ আনুষ্ঠানিক অনুমোদন প্রক্রিয়ায় আছে।
বিএমডিসির তথ্য অনুযায়ী, ৭১টি নিষ্পত্তি হওয়া ঘটনার মধ্যে ১৭টি ঘটনায় ১৭ জন চিকিৎসককে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে বিএমডিসি। এর মধ্যে একজন সাংবাদিককে হেনস্তার ঘটনায় একজন চিকিৎসকের নিবন্ধন স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়। এ ছাড়া বাদী অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন ২০টি ঘটনায়, ২০টি ঘটনায় চিকিৎসককে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সতর্কতা নোটিশ ও ভর্ৎসনা করা হয় যথাক্রমে ৯ জন ও ৫ জন চিকিৎসককে।
একাধিক সাংবাদিক সুনির্দিষ্ট তথ্য তুলে ধরে বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর ছলচাতুরী করে তারা শিক্ষার্থী ভর্তি করায়। এমবিবিএসে ভর্তির অটোমেশন পদ্ধতি বাতিল করার চেষ্টা চালাচ্ছে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মালিকদের সংগঠন।
বিএমডিসির কর্মকর্তারা বলেন, দেশে নিবন্ধিত চিকিৎসক ১ লাখ ৩৪ হাজার ৫৬৮ জন, দন্ত চিকিৎসক ১৪ হাজার ৩২৩ জন এবং চিকিৎসা সহকারী ২৯ হাজার ১৮ জন। চিকিৎসকদের মধ্যে ৩৬ হাজার চিকিৎসকের নিবন্ধন নবায়ন করা নেই। তাঁদের বড় অংশই জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক।
দেশের দুই ধরনের ভুয়া চিকিৎসক মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, কেউ কেউ ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন নিয়েছেন। বিএমডিসি তাঁদের শনাক্ত করতে পারবে। তবে বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন না নিয়েই যারা চিকিৎসার নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন, তাঁদের শনাক্ত করা বিএমডিসির পক্ষে কঠিন।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানাতে পারেন উল্লেখ করে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি কুমিল্লার একটি ঘটনায় আমরা এটা করেছি।’
এমইউ/