মেডিভয়েস রিপোর্ট: রাজধানী ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫১ শতাংশ বহুতল ভবনে এডিস মশার লার্ভা পেয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর); যা গত দুই বছরের চেয়ে বেশি। মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বর্ষার জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন সংস্থাটি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এডিস মশা নিয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই প্রতিবেদন তুলে ধরে।
সংস্থাটি মনে করে, প্লাস্টিকের ড্রাম, সারাক্ষণ ভেজা থাকে এমন মেঝে, প্লাস্টিকের বালতি, পানির ট্যাংক, পানির মিটারের গর্ত, ফুলের টব, লিফটের গর্ত, প্লাস্টিকের মগ ও পট বা বদনা, বাতিল হওয়া খাবারের প্যাকেট ও ব্যবহৃত গাড়ির টায়ারে এডিস মশার লার্ভা বেশি থাকে।
আইইডিসিআরের পরামর্শ হচ্ছে বহুতল ও নির্মাণাধীন ভবনে এডিসের লার্ভা যেন কম পাওয়া যায়। সে জন্য রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহাব) ও ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সহায়তা নিতে হবে। একই সাথে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, নাগরিক ও তরুণ সমাজ এবং স্বার্থসংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে দেশব্যাপী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে হবে। প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে গণমাধ্যমেও।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার তিন হাজার ১৩৪টি ভবনে জরিপ করা হয়। এতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে ৫৪৬টি ভবনে। এর মধ্যে বহুতল ভবন ২৮০টি, যা ৫১ দশমিক ২৮ শতাংশ। এ ছাড়া ৯৮টি নির্মাণাধীন ভবন (১৭.৯৫ শতাংশ), ৯৪টি একতলা বাড়ি (১৭.২২ শতাংশ), ৫২টি আধা-পাকা বাড়ি (৯.৮৬ শতাংশ) এবং ২২টি খালি প্লটে (৪.৮৫ শতাংশ) এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সহকারী পরিচালক ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আক্তার হোসেন বলেন, এককভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার বাইরে নাগরিক হিসেবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ওয়ান হেলথ অ্যাপ্রোচে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার এবং বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে একসঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আগাম ধারণা পেতে প্রতি বছর তিনবার এডিস মশার জরিপ করা হয়–বর্ষার আগে, বর্ষার সময় ও বর্ষার পর। এবার আইইডিসিআর এই জরিপ করলেও এর আগে এই জরিপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা।
টিআই/এনএআর/