মেডিভয়েস রিপোর্ট: বর্তমান বাজারে কোম্পানিভেদে একই ওষুধের মূল্যে তিন থেকে পাঁচ গুণ পর্যন্ত পার্থক্য রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ফার্মাসিউটিক্যাল সংশ্লিষ্টরা। তাঁরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের বিপরীতে বাংলাদেশে ওষুধের দাম তুলনামূলক বেশি।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে তিন দিনব্যাপী ‘১৬তম এশিয়া ফার্মা এক্সপো’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তারা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শামীম হায়দার ও জাতীয় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক বেবী রানী কর্মকার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশীয়ভাবে কাঁচামাল উৎপাদনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা তুলে ধরেন জাকিয়া সুলতানা বলেন। একই সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ওষুধ শিল্পপার্কে দ্রুত গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
দেশেই ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ওষুধ শিল্পপার্ক গড়া হয়েছে উল্লেখ করে স্বাগত বক্তব্যে ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির বলেন, গত বছর সেখানে গ্যাসের বিতরণ লাইন স্থাপন কাজও শেষ হয়েছে। তবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে গেছে উৎপাদন প্রক্রিয়া। স্থানীয়ভাবে ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনে শিল্পপার্ক করা হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় গ্যাস মিলছে না। এতে কাঁচামাল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে অংশ নেন একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ও বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবাদুল করিম বুলবুল। তার বক্তব্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পাওয়া যায় এমন অনেক ওষুধের দাম বাংলাদেশে তুলনামূলক বেশি। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এগুলো সমাধান করা উচিত।
ইরেবা ক্যাপসুল লিমিটেডের পরিচালক ইমতিয়াজ করিম বলেন, কাঁচামাল আমদানিতে দফায় দফায় ডলারের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে ওষুধের দামে। যদি কাঁচামাল দেশেই উৎপাদন করা যেত তাহলে আরও কম দামে ওষুধ দেওয়া সম্ভব হতো।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিদেশী ডেলিগেটরা বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা ফিতা কেটে ‘১৬তম এশিয়া ফার্মা এক্সপো’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এবারের আয়োজনে আমেরিকা, চীন, ইংল্যান্ড, জার্মানি, মালয়েশিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, ইতালি, জাপান, সুইজারল্যান্ড, তাইওয়ান, আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশসহ ৩২টি দেশের ৮০০টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করেছে। এই আয়োজনে রয়েছে ফার্মা প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, বায়োটেক ল্যাব ইকুইপমেন্ট, এপিআই ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টস এবং মেশিনারিজ, ফার্মা ফর্মুলেশন্স ও কন্ট্রাক্ট ম্যানুফেকচারিং। এক্সপোতে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা ঔষধ শিল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রাপাতি ও যন্ত্রাংশ এবং কাঁচামাল সম্পর্কে জানতে পারবে।
‘এশিয়া ফার্মা এক্সপো’ শেষ হবে আগামীকাল শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি)। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এক্সপো খোলা থাকবে।
টিআই/এনএআর/