মেডিভয়েস রিপোর্ট: করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরীতে টিকাদান শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। আজ বুধবার (১৮ জুন) সকালে মেমন জেনারেল হাসপাতালে (মেমন মাতৃসদন-২) ও মোস্তফা-হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে এ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে বৃদ্ধ, প্রসূতি ও করোনাযুদ্ধে প্রথম সারিতে থাকা ব্যক্তিদের এ টিকা দেওয়া হবে।
টিকাদান ছাড়াও রোগী শনাক্তে র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা এবং আক্রান্তদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার বানানোর পরিকল্পনাও রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের।
নগরীর পাঁচটি হাসপাতাল সিটি কর্পোরেশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এগুলো হলো—মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল-১, মেমন জেনারেল হাসপাতাল (মেমন মাতৃসদন-২), বন্দরটিলা মাতৃসদন হাসপাতাল, সাফা-মোতালেব মাতৃসদন হাসপাতাল এবং মোস্তফা-হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল। এর মধ্যে মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল-১ ছাড়া বাকি চার হাসপাতালে করোনা ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া চালানো হবে।
জানা গেছে, আইডি কার্ড থাকলেই এ টিকা নেওয়া যাবে। এ ছাড়া ফাইজারের বুস্টার ডোজ টিকাও নেওয়া যাবে এখান থেকে।
চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মোহাম্মদ ইমাম হোসেন (রানা) মেডিভয়েসকে বলেন, ‘চট্টগ্রামসহ সারাদেশে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নগরবাসীর নিরাপত্তায় করোনা প্রতিরোধী ফাইজার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। আমরা ৩০০ ডোজ টিকা এনেছি, প্রয়োজন হলে আরও নেওয়া হবে।’
করোনার টিকা ছাড়াও নগরীতে আইসোলেশন সেন্টার তৈরির উদ্যোগ হচ্ছে বলেও জানান তিনি। বলেন, মেমন জেনারেল হাসপাতালে একটি আইসোলেশন সেন্টার বানানো হচ্ছে। আক্রান্ত রোগীদের এখানে আইসোলেট করে রাখা যাবে।
ডা. ইমাম হোসেন রানা আরও বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন আরেকটি উদ্যোগ নিচ্ছে, মেমন-২ হাসপাতালে র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করা হবে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিট পাওয়া সাপেক্ষে আশা করছি আগামী সপ্তাহ থেকে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট শুরু করতে পারব।’
এদিকে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এ ছাড়া জনসচেতনতায় লিফলেট বিতরণ ও প্রয়োজনে মাইকিং করা হবে বলেও জানিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন, যা ঢাকা বিভাগের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ঢাকা বিভাগের ঢাকা জেলাতেই (মহানগরসহ) মোট ২৫০ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যান্য জেলায় কোনো সংক্রমণ নেই। তবে চট্টগ্রাম ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা কক্সবাজারে আক্রান্ত হয়েছেন চারজন। এ ছাড়া কুমিল্লায় তিন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় দুইজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪৫ জন। এ ছাড়া রাজশাহী জেলায় ২৮, খুলনায় এক এবং সিলেটে দুইজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যান্য বিভাগে করোনার সংক্রমণের তথ্য পাওয়া যায়নি।
সব মিলিয়ে চলতি বছরে মোট ৩৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন সাতজন। এ নিয়ে করোনার প্রথম সংক্রমণ থেকে এ পর্যন্ত ২০ লক্ষ ৫১ হাজার ৮৭৬ আক্রান্ত এবং ২৯ হাজার ৫০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এনএআর/