মেডিভয়েস রিপোর্ট: খুলনা মেডিকেল কলেজের মানসিক বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. এসএম ফরিদুজ্জামান ও নাক-কান-গলা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. কামরুজ্জামানকে দিনাজপুরের আব্দুর রহীম মেডিকেল কলেজে অকারণ বদলির অভিযোগে চাকরি থেকে অব্যহতি নিয়েছেন এ দুই জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক।
আজ শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম মেডিভয়েসকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘অকারণ উপায়ে খুলনার দুই জ্যেষ্ঠ চিকিৎসককে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এতে খুলনা মেডিকেলের শিক্ষার্থীসহ এ অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। খুলনা বিএমএর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের পরে কেন্দ্রীয় বিএমএর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে।’
এদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ) খুলনা মেডিকেল কলেজ শাখা। সংগঠনটির সভাপতি ডা. দিবাকর চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক ডা. আসাদুজ্জামান সাগর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে হঠাৎ ২৯ ডিসেম্বরে মানসিক বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. এসএম ফরিদুজ্জামানকে দিনাজপুরে আব্দুর রহীম মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়। এর ঠিক দুই দিন পরে নাক-কান-গলা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. কামরুজ্জামানকেও আব্দুর রহীম মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়।
বদলি আদেশে বলা হয়, তিন দিনের মধ্যে যোগদান না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পদ অবমুক্ত এবং যোগদানে অবহেলা করলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার ওই দুই জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক চাকরি ছেড়ে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক বলেন, ২০২৩ সালে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার দিন আলাদা দুটি হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন ডা. কামরুজ্জামান এবং ডা. ফরিদুজ্জামান। তখন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে খুলনা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন একজন উপসচিব। সময় মতো শিক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্ন পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে মতানৈক্য সৃষ্টি হয় উপসচিব এবং ওই দুই চিকিৎসকের মধ্যে। পরীক্ষার পর মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতেও এই দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এতদিন কোনো কিছু না হলেও আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত সভায় বিষয়টি আবার সামনে এলে হঠাৎ করে তাদের বদলি করা হলো।
খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, গত বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার দিন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির সাথে একটা সমস্যা হয়েছিল। কিন্তু এখন ঠিক কী কারণে তাদের বদলি করা হয়েছে জানি না। তবে তারা দুজনই পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।
এসএস/এএনএম