মেডিভয়েস রিপোর্ট: ক্যান্সার প্রতিকারে চিকিৎসা আর অর্থের পাশাপাশি রক্তেরও অনেক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। যেকোনো সময় ক্যান্সার রোগীর রক্তের প্রয়োজন হতে পারে। এজন্য রোগী এবং স্বজনরা রক্তের সন্ধানে পেরেশান হয়ে পড়েন। এ ক্ষেত্রে সকলকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
আজ সোমবার (১ জুলাই) রাজধানীতে আয়োজিত ক্যান্সার রোগীদের সেবায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে অতিথিদের আলোচনায় এসব কথা উঠে এসেছে।
রাজধানী ঢাকার মিরপুরে রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে এই কর্মসূচি আয়োজিত হয়। রক্তদাতা সংগঠন সন্ধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইউনিটের সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢামেক রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আলীয়া শাহনাজ বলেন, ক্যান্সার রোগীর জন্য যেকোনো সময় রক্তের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ হিমোগ্লোবিনের লেভেল একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে থাকতে হয়। অন্যথায় যতই চিকিৎসা করা হোক, সেটা কোনো কাজে আসে না।
তিনি বলেন, এটি অব্যাহতভাবে চলার মতো একটি প্রক্রিয়া। ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীসহ সকল স্বজনের দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায়। এজন্য সকলকে রক্তদানে এগিয়ে আসতে হবে। রক্ত দিলে কারো কোনো ক্ষতি হয় না।
এ সময় রক্তদানের পাশাপাশি ক্যান্সার রোগী এবং স্বজনদের কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন অধ্যাপক আলীয়া শাহনাজ। বলেন, ‘সারাবিশ্বে ক্যান্সার রোগীর কাউন্সেলিংয়ের জন্য আলাদা একটা বিভাগ থাকে। সারা পৃথিবীতেই হয়। আমরাও বলি, তবে এ ব্যাপারে অতিরিক্ত চাপের কারণে সেভাবে হয়ে ওঠে না।’ এক্ষেত্রে ক্যান্সার রোগী এবং সেবা প্রদানকারীদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করায় রেনেটাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
একই সাথে ক্যান্সার রোগীদের খরচের কোনো শেষ নেই উল্লেখ করে ওষুধের দাম কমানোর জন্য ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোর প্রতিও আহ্বান জানান অধ্যাপক আলীয়া শাহনাজ। পাশাপাশি তাদের সেবার মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রেডিওথেরাপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. তৌফিক হাসান ফিরোজ বলেন, ক্যান্সার রোগীরা অনেক সময় রক্তের জন্য পেরেশানিতে পড়ে যান। এ জন্য রক্তদানে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। একই সাথে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতার জন্যও এগিয়ে আসতে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেনাটা লিমিটেডের মার্কেটিং ফার্মা ডিভিশনের গ্রুপ প্রোডাক্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ আমির আব্দুল্লাহ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ঢামেকের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তন্নিমা অধিকারী ও ডা. মেহের জাবীন শেফতা এবং রেনাটার চিফ মার্কেটিং অফিসার তানভীর সজীব প্রমুখ।
এ সময় রেনাটার হেড অফিস এবং ফ্যাক্টরির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মোট ৩০ ব্যাগ রক্ত দান করেন। সবশেষে অতিথিদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি রেনাটা ওষুধ উৎপাদনের পাশাপাশি সাইকোলজিক্যাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টারের সহযোগিতায় ক্যান্সার রোগী এবং কেয়ার গিভারদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে। সারা বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে বিনামূল্যেও ওষুধ সরবরাহ করে থাকে তারা। এবারই প্রথমবারের মতো রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।
এনএআর/এমইউ