অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এসেছে কবি ও চিন্তক ডা. বাপ্পা আজিজুলের বই ‘থটস অব টাইম ফ্রম সূরা আসর।’ অক্ষরবৃত্ত পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত বইটি মেলায় বাংলামেডের (১০৬০) স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। এর শুভেচ্ছা মূল্য ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গত ২১ ফেব্রুয়ারি সিলেটে মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের আখালিয়া শাখায় বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. কেএম আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ মাসউদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারুদ্দিন চৌধুরী, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-ইলাহি, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের (সিওমেক) অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জিয়াউর রহমান চৌধুরী।
আলোচনা করেন শাহজালাল জামিয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. লুৎফুর রহমান হুমায়দী, নর্থ-ইস্ট মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মুনাজ্জির আলী, স্কলার্স হোম মেজরটিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফয়জুল হক, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) শিক্ষা অফিসার ড. মো. তুতিউর রহমান, সিওমেকের শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আখলাক আহমেদ, পার্কভিউ মেডিকেল কলেজের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, গ্যাস্ট্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আলমগীর শাফকাত, ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুজ্জামান, রহমান একাডেমীর অধ্যক্ষ মুহিবুর রহমান প্রমুখ।
বইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ডা. বাপ্পা আজিজুল বলেন, বিজ্ঞানের বদৌলতে আমরা জানি, প্রসঙ্গ কাঠামো বদলে গেলে সময় ও দূরত্ব বা ব্যাপ্তির পরিবর্তন হয়। আইনস্টাইনের মতে, পরম সময় বলে কিছু নেই। কিন্তু নিউটন ধর্ম ও দর্শনের মতো করে পরম সময় নিয়ে ভেবেছিলেন। তাঁর মতে, পরম সময় ‘বাহ্যিক কিছুর সাথে সম্পর্ক ছাড়াই সমানভাবে প্রবাহিত হয়।’
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সময়ের গণনা শুরু হয় 'বিগ ব্যাঙ' (Big Bang) থেকে। এর আগে সময় বা t=0 ছিল। এটি বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা যে, বিজ্ঞান বিগ ব্যাঙের আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলীকে সময় ও ব্যাপ্তির সাপেক্ষে সম্পৃক্ত বা বর্ণনা করতে পারেনি। তাই সময়ের পরমতা সম্পর্কে বিজ্ঞানের ধারণা নেই। মুসলিম চিন্তাবিদ যেমন আল-ফারাবি (৮৭৩-৯৫০) এবং ইবনে সিনা (৯৮০-১০৩৭) মনে করেছিলেন যে, সৃষ্টির কাজটিকে অপার্থিব (স্থায়ী) এবং সম্পূর্ণরূপে যৌক্তিক হিসাবে কল্পনা করা উচিত।
মূলত সময় ব্যাপ্তি থেকে সম্পূর্ণ পৃথক, স্বাধীন ও মৌলিক। বিজ্ঞান অনুযায়ী জগত চতুর্মাত্রিক। ব্যাপ্তির তিন মাত্রার সাথে সময়ের এক মাত্রা যোগ করে হয় চার মাত্রা। ফলে পদার্থবিদ্যার সূত্রানুসারে বাম, ডান কিংবা অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু আমরা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে দেখতে পাই, বাম-ডানের মধ্যে যদি রদবদল করা হয়, তাহলে দুনিয়ার তাবৎ বাঁহাতি মানুষ ডানহাতি হবে, বুকের বামপাশের হৃদযন্ত্র ডানপাশে অবস্থান নেবে। এতে খুব বেশি অসুবিধা না হলেও অতীত ও ভবিষ্যতের মধ্যে যদি রদবদল হয়, তাহলে কী মহাকাণ্ড ঘটবে চিন্তা করুন। ঠিক টাইম ট্রাভেলের ফিকশনের মতো ঘটনা ঘটবে।
তবে এখান থেকে একটা ব্যাপার অনুমান করা যায়, হাশরের ময়দানে কোনো মানুষকে যখন তার দুনিয়ার আমলনামা দেখানো হবে, তখন সময়ের ডাইমেনশন উল্টে দিয়ে হয়ত তাকে দুনিয়ার জীবনে টাইম ট্রাভেল করানো হতে পারে।
'থটস অব টাইম ফ্রম সূরা আসর' বইটিতে কুর'আন, হাদিস, ফিকহ, ইতিহাস, যুক্তি, দর্শন ও বিজ্ঞানের আলোকে সময়ের অভূতপূর্ব ব্যাখ্যা হাজির করেছেন কবি ও চিন্তক বাপ্পা আজিজুল। হ্যাপি রিডিং!
এমইউ/