মেডিভয়েস রিপোর্ট: রাজধানী ঢাকার বায়ুমান আরও অবনতি হয়েছে। একিউআই (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) সূচকে ঢাকার বাতাস আগের দিনের মতো একই শ্রেণিতে থাকলেও দূষণের মাত্রা বেড়েছে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার একিউআই স্কোর ১৪০-এ পৌঁছায়, যা সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য অস্বাস্থ্যকর।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) এই স্কোর ছিল ১২৫। ফলে একদিনের ব্যবধানে বায়ুমান আরও খারাপ হয়েছে। একই সঙ্গে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থানও উপরে উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানী ছিল ১৫তম স্থানে, আজ তা উঠে এসেছে অষ্টম স্থানে।
বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজও শীর্ষে রয়েছে ভারতের দিল্লি। ২৬৮ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরটি ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ুমানের স্তরে রয়েছে। ভারতীয় শহর মুম্বাইও দূষণের শীর্ষ দশে অবস্থান করছে, যার একিউআই স্কোর ১৫০।
এছাড়া দূষণের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে পাকিস্তানের লাহোর (১৭২), তৃতীয় স্থানে উগান্ডার কামপালা (১৬২), চতুর্থ স্থানে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন (১৫৯) এবং পঞ্চম স্থানে ভিয়েতনামের হানোই (১৫৫) রয়েছে।
বৈশ্বিক পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১৪ মার্চ পর্যন্ত দূষণের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বায়ুদূষণের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। শীর্ষে রয়েছে আফ্রিকার দেশ চাদ। গত বছরও সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ ছিল বাংলাদেশ ও চাদ।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা আইকিউএয়ার জানায়, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণ বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার উচ্চমাত্রায় উপস্থিতি। এই দূষণ ফুসফুসজনিত রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড অনুযায়ী, ৫০-এর নিচে থাকলে বাতাস বিশুদ্ধ, ৫১-১০০ হলে সহনীয়, ১০১-১৫০ হলে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর, ৩০০-এর বেশি হলে বাতাসকে বিপজ্জনক বা দুর্যোগপূর্ণ ধরা হয়।
দূষণ রোধে করণীয়
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল (বিএমজে) প্রকাশিত এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সৃষ্ট দূষণ বিশ্বব্যাপী বছরে প্রায় ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
দূষণ রোধে বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
১. বাইরে বের হলে মাস্ক পরা।
২. সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়া।
৩. ইটভাটা ও কলকারখানার বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা।
৪. নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা।
৫. নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা ও দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং
৬. ধোঁয়া ছড়ানো পুরোনো যানবাহন রাস্তায় না নামানো।
এসআই/