মেডিভয়েস রিপোর্ট: গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনুসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় স্থানীয় নাসের হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ডা. আলা আল-নাজ্জারের নয় সন্তান নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৪ মে) আল-নাজ্জারের বাসভবনে চালানো এই হামলায় বাড়িটি আগুনে পুড়ে যায়। নিহত শিশুরা হলেন—সিদার, লুকমান, সাদিন, রেভাল, রুসলান, জুবরান, ইভ, রাকান ও ইয়াহিয়া। তাদের বয়স ছিল সাত মাস থেকে ১২ বছরের মধ্যে।
এ ঘটনায় আল-নাজ্জারের স্বামী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন, মাথা ও বুকের গুরুতর জখম নিয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। তাদের একমাত্র জীবিত সন্তান আদাম (১১) মধ্যম মাত্রার আঘাত নিয়ে তার মায়ের পাশে চিকিৎসা নিচ্ছে।
নাসের হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডা. আহমাদ আল-ফাররা বলেন, ঘটনাটি অবিশ্বাস্য। ডা. আলা আল-নাজ্জার কাজ করছিলেন, তখনই পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল। তিনি এখনো সন্তান ও স্বামীর পাশে থাকার চেষ্টা করছেন।
ডা. আল-ফাররা বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তিনি বলেন, এই শিশুদের কোনো কণ্ঠস্বর নেই। তাদের হয়ে কথা বলার দায়িত্ব এখন আমাদের।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি অঞ্চল বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রানচেসকা আলবানিজ এই হামলাকে গণহত্যার নতুন পর্যায়ের নিষ্ঠুর নিদর্শন বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, দুই চিকিৎসক যখন অন্যদের সহায়তায় কাজ করছেন, তখন তাদের নয়টি সন্তানকে লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত ও নিষ্ঠুর হামলা।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, তারা একটি ভবনে অবস্থানরত সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করেছিল, যেখানে ইসরায়েলি বাহিনীও ছিল এবং আশপাশের এলাকা থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তবে নিরীহ বেসামরিকদের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানায় তারা।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শুক্রবার ও শনিবার দুপুর পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭৯ জনের মৃতদেহ হাসপাতালগুলোতে আনা হয়েছে। তবে উত্তরের অনেক এলাকায় পৌঁছানো সম্ভব না হওয়ায় আসল সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ৯০১ জন, আহত হয়েছে এক লক্ষ ২২ হাজার ৫৯৩ জন।
এনএআর/