মেডিভয়েস রিপোর্ট: তামাকজনিত রোগে অকাল মৃত্যুর মিছিল থামাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন দেশের তরুণ চিকিৎসকরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘তরুণদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের দাবি’ শীর্ষক এক মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান। মানববন্ধনের আয়োজন করে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ।
তরুণ চিকিৎসকরা বলেন, বর্তমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক দুর্বলতা রয়েছে, যা সংশোধন করলে তামাকজনিত মৃত্যুহার এবং জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি অনেকাংশেই হ্রাস পাবে। তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসি অনুযায়ী ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ ধারা সংশোধনের দাবি তোলেন। সেগুলো হলো- ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, তামাক বিক্রয়স্থলে প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটসহ সব ধরণের ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট থেকে কিশোর-তরুণদের রক্ষা করা, তামাক পণ্যের প্যাকেট ও কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা বাড়িয়ে ৯০% করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা ও খোলা অবস্থায় বিক্রি নিষিদ্ধ করা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ অধূমপায়ী নাগরিক পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। এ অবস্থায় জনসাধারণ, বিশেষ করে তরুণ ও শিশুদের সুরক্ষায় শতভাগ ধূমপানমুক্ত পাবলিক প্লেস নিশ্চিত করতে আইন সংশোধন অপরিহার্য।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও সন্ধানী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘স্কুল-কলেজের আশপাশে থাকা মুদি দোকানে ঝুলতে থাকা সিগারেট শিশুকিশোরদের আকৃষ্ট করে। এসব প্রদর্শনী বন্ধ করা না গেলে নতুন প্রজন্মকে তামাকের ভয়াবহ ফাঁদ থেকে রক্ষা করা কঠিন হবে।’
প্ল্যাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. ফারজানা মুন বলেন, ‘তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম একটি প্রহসন। তারা একদিকে মৃত্যুর পণ্য বিক্রি করছে, অন্যদিকে সমাজসেবার নামে নিজেদের ভাবমূর্তি গড়ে তুলছে। এভাবে তারা নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করে।’
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপদেষ্টা নাইমুল আজম খান, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস্-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুস সালাম মিয়া, সন্ধানী, প্ল্যাটফর্ম ডক্টরস ফাউন্ডেশনসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী, তামাকবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যম কর্মীরা।