মেডিভয়েস রিপোর্ট: চিকিৎসকদের উপর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহতদের হামলার পর অচল হয়ে পড়েছে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট (এনআইও) হাসপাতাল। নিরাপত্তার অভাবে চিকিৎসকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজে না ফেরায় বন্ধ রয়েছে রোগী সেবা। আহতরা বাসা-বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করছে—এমন গুঞ্জনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন হাসপাতালটির চিকিৎসকরা।
আজ শুক্রবার (৩০ মে) এনআইওর একাধিক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত বুধবার (২৮ মে) বেলা ১১টার দিকে হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরীর কক্ষে ভাঙচুরের পর চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলা করে আহতদের একাংশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করলে সেখানেও হামলা করা হয়। এ ঘটনায় ৯ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আহত হন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পর চোখের জরুরি সেবা নিতে আসা দেড় শতাধিক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। এ ছাড়া চিকিৎসক-নার্সদের হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার পর হাসপাতাল কোয়ার্টারে আটকে পড়েছিলেন চার পরিবারের সদস্যরা। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চক্ষু চিকিৎসক মেডিভয়েসকে বলেন, ‘আহতরা বলছে, আমরা তো পাগল, এখন আমরা যে কোনো কাজ করতে পারি। তারা চিকিৎসকদের বাসা-বাড়িতে হামলার পরিকল্পনাও করছে। তাদের ভয়ে সাধারণ রোগীরাও হাসপাতাল ছেড়েছে। তবে যাওয়ার জায়গা নেই যাদের, এমন কিছু রোগী এখনও অবস্থান করছে। তা ছাড়া কোয়ার্টারে চারটি পরিবার আটকে আছে।’
এ বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমদ চৌধুরী কথা বলতে রাজি হননি। জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম মেডিভয়েসকে বলেন, হাসপাতাল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। আতঙ্কে চিকিৎসক, নার্স কিংবা কোনো স্বাস্থ্যকর্মী হাসপাতালে যেতে পারছেন না। রোগীরাও চলে গেছে। তবে জুলাইয়ের আহতদের একটি অংশ এখনও অবস্থান করছে। উদ্ধারের পর আটকে পড়া পরিবারগুলো কোয়ার্টার ছেড়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ডা. জানে আলম বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় হাসপাতালের পরিস্থিতি জানে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় হাসপাতাল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ সেবা চালু করা যাবে নিশ্চিত নই।’
প্রসঙ্গত, নানা দাবিতে গত ২৫ মে হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে বিষপান করেন চার আহত তরুণ। এর রেশ না ফুরাতেই মঙ্গলবার (২৭ মে) পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরীকে অবরুদ্ধ করে গায়ে পেট্রোল ও কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান তারা। পরদিন বুধবার চিকিৎসকদের উপর হামলা হয়।
এদিকে এসব ঘটনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালকের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। পরে তাকে সাত দিনের ছুটি দেওয়া হয়। তার স্থানে ডা. জানে আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এনএআর/