মেডিভয়েস রিপোর্ট: স্বল্প জামানতে আধূনিক বোনস ব্যাংক থেকে বোনস সংগ্রহের সুযোগ পাচ্ছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) নবীন শিক্ষার্থীরা। ৪০-৪৫ হাজার টাকায় বাধ্যতামূলক কেনার পরিবর্তে মাত্র ১০ হাজার টাকার জামানতে প্রতি দু’জন শিক্ষার্থী একটি করে বোনস সেট পাচ্ছেন এই ব্যাংক থেকে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা ধূমপান নিবারণ করি’র (আধূনিক) রামেক শাখার উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে এই বোনস ব্যাংক। প্রায় ১৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হলেও এতদিন এটি স্বল্প পরিসরে পরিচালিত হচ্ছিল। এ বছর প্রথমবারের মতো ব্যাপকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে সংগঠনটি।
জানা গেছে, সম্প্রতি ‘সংকল্পদীপ্ত-৬৬’ ব্যাচের ৫৪ জন শিক্ষার্থীকে ২৭ সেট বোনস দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল আট শিক্ষার্থীকে চার সেট বোনস দেওয়া হয়েছে বিনা জামানতে। বাকিদের প্রতি দু’জন একটি বোনস সেট পেতে জামানত দিয়েছেন মাত্র ১০ হাজার টাকা। প্রথম পেশাগত পরীক্ষার পর বোনস জমা দিয়ে সেই জামানত ফেরত নেওয়া যাবে।
মূলত রাজশাহী মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের প্রায় বাধ্যতামূলকভাবে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে বোনস কিনতে হতো। আধূনিক বোনস ব্যাংকের এই উদ্যোগ সেই ‘বোনস সিন্ডিকেট’ ভেঙে দিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
তবে বোনসের স্বল্পতার কারণে এ বছর নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ সম্ভব হয়নি। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আগামী বছর থেকে তারা নারী শিক্ষার্থীদের জন্যও বোনসের ব্যবস্থা করবেন।
জানতে চাইলে আধূনিক বোনস ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবিদ হাসান মেডিভয়েসকে বলেন, ‘আগে এখানে বোনস বাণিজ্য হতো। ৪০-৪৫ হাজার টাকার নিচে পাওয়া যেত না। সেই সিন্ডিকেটটা আমরা ভেঙে দিচ্ছি। মাত্র ১০ হাজার টাকার জামানতে শিক্ষার্থীদের বোনস দিচ্ছি। ইতোমধ্যে ৫৪ জনকে ২৭ সেট দেওয়া হয়েছে। চার সেট বোনস দেওয়া হয়েছে বিনা জামানতে। আরও কয়েকজনের প্রক্রিয়া চলছে।’
তিনি বলেন, ইসলামে সাধারণ খেলনা ও পণ্য সামগ্রীর মতো মানব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্রয়-বিক্রয় হারাম করা হয়েছে। তবে মানব শরীর অধ্যয়নের জন্য বোনস কেনা জায়েয বলে মত দিয়েছেন ধর্মীয় স্কলাররা। কিন্তু বিক্রি একেবারে নিষিদ্ধ। আমাদের এই উদ্যোগের মাধ্যমে হারাম বোনস বাণিজ্য থেকে মুক্তির পথ তৈরি হয়েছে।
আবিদ হাসান আরও বলেন, ‘বোনস ব্যাংক প্রায় ১৫ বছর আগে শুরু হলেও আমরা তখন পূর্ণমাত্রায় চালু করতে পারিনি। এবার বৃহৎ পরিসরে পুরো ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। মেয়েদের অংশগ্রহণও আমরা নিশ্চিত করতে চাই। আগামী বছর থেকে তাদের মধ্যেও বোনস বিতরণ করা হবে।’
এনএআর/