মেডিভয়েস রিপোর্ট: বরগুনা পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের মধ্যে পাঁচটি ওয়ার্ডই ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। জেলা সদরে লার্ভার ঘনত্ব স্বাভাবিকের তুলনায় সাড়ে ৮ গুণ বেশি পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আইইডিসিআর বলছে, বরগুনায় ডেঙ্গুর ডেন-৩ ও ডেন-২ সোরোটাইপের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে বরগুনায় পরিচালিত জরিপের তথ্য তুলে ধরে আইইডিসিআর।
জরিপের ফলাফল উপস্থাপনকালে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, বরগুনায় ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ ডেন-৩ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। ৩৯ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী ডেন-২ তে আক্রান্ত হয়েছেন। বাকি ১৪ শতাংশ আক্রান্ত হয়েছেন অন্য ধরন ডেন-২ ও ৩-তে। ৪৩টি অনুমান জিনোম পরীক্ষা করে এই তথ্য মিলেছে।
তিনি জানান, চলতি মাসের ১৬ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত এই সার্ভে পরিচালনা করা হয়। ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরগুনা সদরে ডেঙ্গু আক্রান্ত বেশি, এরপর পাথরঘাটায়। কম রোগী ছিল আমতলী আর বেতাগী উপজেলায়।
তবে বরগুনায় ডেঙ্গুর চিত্র কতটা ভয়াবহ তা এখনই বলা যাচ্ছে না বলে জানান ডা. তাহমিনা শিরিন। বলেন, এটি বুঝতে আরও সময় লাগবে।
প্রসঙ্গত, ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী চারটি প্রধান সেরোটাইপ। ২০২৪ সালে রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীদের ৮৫ শতাংশেরও বেশি সেরোটাইপ–২ (ডেন–২) দ্বারা আক্রান্ত ছিলেন। ২০২৩ সালেও ডেন-২-এ আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল বেশি। সে বছর সীমিতসংখ্যক নমুনা বিশ্লেষণে ৬২ শতাংশ রোগীর ডেন-২ ধরন দেখা যায়। বাকি ৩৮ শতাংশ আক্রান্ত ছিলেন ডেন-৩-এ। আর ২০২২ সালে নমুনা বিশ্লেষণে প্রাধান্য ছিল ডেন-৩-এর। ৯০ শতাংশ রোগী আক্রান্ত হয়েছিল ডেন-৩-এ। বাকি প্রায় ১০ শতাংশ ছিল ডেন-৪। এ বছর আবার ডেন-৩ এর প্রধান্য দেখা দিচ্ছে।
বরগুনার সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত বরগুনায় ২ হাজার ৪৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন। জেলাটিতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ পর্যন্ত মোট ২২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। জেলায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার প্রায় ০.৯%, যা জাতীয় গড়ের চেয়েও বেশি।
এনএআর/