মেডিভয়েস রিপোর্ট: এবারের অমর একুশে বইমেলা-২০২৪ এ প্রকাশিত হয়েছে ডা. খন্দকার আলী কাওসারের উপন্যাস ‘অন্তরের রূপান্তর।’ বাংলার প্রকাশন থেকে প্রকাশিত পৌনে দুইশ’ পৃষ্ঠার এ বইয়ের মুদ্রিত মূল্য ৪৬০ টাকা, যা এখন পাওয়া যাচ্ছে ২৫ শতাংশ ছাড়ে।
আগে লেখালেখি করলেও খন্দকার আলী কাওসারের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস অন্তরের রূপান্তর।
যে গল্প মলাটবদ্ধ
বইটি মূলত ৯০ দশকে বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত পরিবারের এক কিশোরের জীবনের গল্পকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে। এসেছে প্রেম আর তার সাথে টানাপোড়েন। আছে ব্যর্থতার গল্প। সেটাকে অতিক্রম করে আছে জীবন বিনির্মাণের গল্পও। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ঘটনা বিস্তার লাভ করেছে বিদেশে। সময়ের পরিক্রমায় নতুন শতাব্দীতে প্রবেশ করেছে ঘটনাপ্রবাহ। দুই সময়ের এক বর্ণনামূলক তুলনা উপন্যাসটিতে এনে দিয়েছে একটি ভিন্ন আমেজ।
সাফল্যের একটা পর্যায়ে গেলে আগে ছেড়ে যাওয়া অনেকেই ফিরে আসে। তখন কি করা উচিত? এসবের উত্তর দিতে গিয়েই এক শক্তিশালী সামাজিক বার্তা দেওয়া হয়েছে উপন্যাসটিতে। লেখকের বর্ণনা শৈলী আর ঘটনার গতিময়তা পাঠককে ধরে রাখবে বলেই আশা করা যায়।
একটা উপন্যাসের সব ঘটনা সত্যি না, কিংবা হতেও পারে। কিন্তু লেখকের বর্ণনায় অনেক সময় সত্যিই মনে হয়। ডা. কাওসারের লেখা উপন্যাসটি আপনাকে সে ধরনের একটা সত্য-মিথ্যার দোলাচলের অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়েই নিয়ে যাবে।
কোথায় পাওয়া যাবে
ইতোমধ্যেই পাঠকমহলে সাড়া ফেলে দেওয়া বইটির প্রথম সংস্করণ প্রায় শেষ হওয়া পথে। বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ২০৭-২০৮ নাম্বার স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়াও অনলাইন শপ রকমারি ও বইপ্রহরেও পাওয়া যাচ্ছে উপন্যাসটি।
লেখিলেখিতে যেভাবে
খন্দকার আলী কাওসার ছাত্র জীবন থেকেই লেখালেখি করেছেন। কলেজ বার্ষিকী, ম্যাগাজিন, পত্রিকা ও শেষে অনলাইন মাধ্যমে লেখালেখি করেছেন।
মেডিকেল শিক্ষা জীবনে সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি ঢাকা সুবচন নাট্যদলে মঞ্চনাটক করতেন। সেখানে তর সম্পাদিত মঞ্চনাটক মঞ্চায়ন হয়েছে। যুক্ত ছিলেন আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলনে।
সমুজ্জ্বল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও
কর্মজীবনের মাঝপথে দেশ পরিবর্তনে পেশাগত জীবনে ব্যস্ততা বেড়েছে। তা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাংলা কিংবা ইংরেজিতে উপস্থাপনা ও নানা ধরনের পরিবেশনা চালিয়ে গেছেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে দীর্ঘ যোগাযোগের ফলে বিভিন্ন সময় গল্প ও কবিতা লেখা অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর সহজাত রসবোধ আর লেখার চমৎকার প্রবাহ অন্য লেখার মতো এই উপন্যাসটিকেও পাঠকেরা কাছে সুপাঠ্য করে তুলবে বলে আশা করা যায়।
লেখালেখিতে সম্পৃক্ততার লক্ষ্য
জীবন লব্ধ জ্ঞান এবং তার সৃষ্টিশীলতার মধ্যে একটা মেলবন্ধন ঘটিয়ে সমকালীন ও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তার বক্তব্যগুলোকে পৌঁছে দিতে বই লেখার মাধ্যমকে ব্যবহার করতে চান লেখক।
দেশে-বিদেশে বিভিন্ন রকমের, বর্ণের, গোত্রের এবং মানসিকতার মানুষের সংস্পর্শে যে বিপুল অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়েছে তার ভান্ডারে তা তিনি ভাগাভাগি করতে চান অন্যদের সাথে। তার চমৎকার বর্ণনা শৈলী এবং রসবোধসম্পন্ন পরিবেশনা অনলাইন মাধ্যমে তার এক বিপুল গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে। এসবের সমন্বয়ে তার লেখাগুলো সুপাঠ্য হবে বলেই তিনি ও তার পাঠকেরা মনে করেন।
লেখালেখি যেন কাজেরই অঙ্গ
নিউরোসার্জারির মতো জটিল একটা পেশায় কর্মরত থেকেও তিনি তাঁর অবসর সময়কে নিবেদন করেছেন লেখালেখিতে। ডা. খন্দকার আলী কাওসার মনে করেন, এই লেখালেখির মাধ্যমে তিনি নিয়মিত কাজের চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেন। নিজেকে ছড়িয়ে দিতে পারেন অন্য এক প্রশান্তির জগতে। ফলে এই লেখালেখি যেন তার কাজের অঙ্গই হয়ে উঠেছে।
লেখক পরিচিতি
পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে ডা. খন্দকার আলী কাওসার সর্বকনিষ্ঠ। জন্ম ও বেড়ে ওঠা খুলনায়। পাবনা ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষায় মোতালিকায় স্থানসহ পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে করেছেন এমবিবিএস।
পরে ডাক্তারি বিষয়ে উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে সার্জারিতে এফসিপিএস ও নিউরোসার্জারিতে এমএস করেছেন। পরম মমতা ও সুদক্ষ হাতে করেন ব্রেন ও স্পাইনের অপারেশন। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অব সার্জন ইংল্যান্ড থেকে এমআরসিএস শেষ করে ২০১২ সালের শেষে যুক্তরাজ্যের ডান্ডিতে নিউরোসার্জারিতে চাকরি শুরু করেন। এডিনবরায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছেন নিউরোসার্জারি ও মেজর ট্রমা কনসালটেন্ট হিসেবে।
এএনএম/