মেডিভয়েস রিপোর্ট: পাঠ্যপুস্তকে তামাকবিরোধী কোনো বক্তব্য না থাকায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। এটিকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বলেছেন, ধূমপানবিরোধী লড়াইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বড় ভূমিকা থাকা উচিত।
আজ শনিবার (৩১ মে) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক সায়েদুর রহমান এসব কথা বলেছেন। এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ধূমপানকে সকল নেশার প্রবেশদ্বার উল্লেখ করে অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘তামাক কোম্পানিগুলো গবেষণা করে তাদের বাজার তৈরি করে, অথচ আমরা আমাদের সন্তানদের রক্ষায় তেমন উদ্যোগ নিচ্ছি না।’
তিনি বলেন, ‘ধূমপানবিরোধী লড়াইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বড় ভূমিকা থাকা উচিত। কিন্তু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় তামাকবিরোধী বিষয়ে কোনো প্রশ্ন নেই, পাঠ্যপুস্তকে একটি প্যারাগ্রাফও নেই—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আট-দশ বছর বয়স থেকেই শিশুদের শেখাতে হবে, ধূমপান শরীরে কী ধরনের ক্ষতি করে।’
‘তামাক কোম্পানির প্রভাব ধীরে ধীরে রাষ্ট্রের ওপরও পড়ছে, এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য শক্ত অবস্থান নিতে হবে’—যোগ করেন অধ্যাপক সায়েদুর রহমান।
এদিকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সরকারকে যে রাজস্ব দেয়, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ আমাদের ব্যয় করতে হয় স্বাস্থ্য খাতে। তামাক ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহার যদি আমরা প্রতিরোধ করতে পারি, তাহলে ক্যান্সারসহ তামাকজনিত যে সব রোগ হয়, সেগুলোর পেছনে আমাদের এত ব্যয় করতে হবে না। রোগ প্রতিরোধে নজর দিতে হলে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আমাদের গড়তেই হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএিচও) ও তামাক নিয়ন্ত্রণ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনে (এফডিটিসি) আমরা স্বাক্ষর করেছি, অথচ একইসঙ্গে তামাক কোম্পানিগুলোর বোর্ডেও সরকার আছে—যাতে তাদের ব্যবসা ভালোভাবে চলে। এই বৈপরীত্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের এসব কথা স্পষ্টভাবে বলা উচিত। এখন যদি আমরা এসব বলতে না পারি, তাহলে আর কখনোই পারব না।
স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, রেল সচিব ফাহিমুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর প্রমুখ। পরে বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রশংসনীয় অবদান রাখায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের মধ্যে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্মাননা-২০২৫’ প্রদান করা হয়।
এনএআর/