মেডিভয়েস রিপোর্ট: রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ও কণ্ঠশিল্পী ডা. কেকা দৃষ্টি শর্মা মৃত্যুবরণ করেছেন। ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বুধবার (২৪ এপ্রিল) ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ ও কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া মেডিভয়েসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডা. প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া জানান, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডা. কেকা দৃষ্টি শর্মা মৃত্যুবরণ করেছেন। তার স্বামীও দেশের বাইরে থাকেন। তারা দেশে পৌঁছালে মরদেহের সৎকার হবে।
ডা. কেকা দৃষ্টি শর্মা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। পরে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে কমিউনিটি মেডিসিন ও পাবলিক হেলথ বিভাগে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর ২০১৬ সালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রোগ্রামে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগ দেন।
পরবর্তীতে ৩৯তম বিসিএসে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে তিনি। এরপর ২০২৪ সালে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। একই সঙ্গে কণ্ঠশিল্পীও ছিলেন ডা. দৃষ্টি শর্মা। এ ছাড়া ব্যক্তিগত জীবনে এই চিকিৎসক ছিলেন এক কন্যা সন্তানের জননী।
জানা গেছে, ডা. কেকা দৃষ্টি শর্মা দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ব্যাধি ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন, যা পরবর্তীতে মস্তিষ্ক, লিভার ও হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে। কিছু দিন আগে তিনি ইমিউনোথেরাপি, ডেনোসুম্যাব ও মস্তিষ্কে রেডিওথেরাপি গ্রহণ শুরু করেন। ক্যান্সার নিয়ে সামাজিক গবেষণাও করতে চেয়েছিলেন তিনি। ‘তৃণমূল পর্যায়ের নারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার স্ক্রিনিং সংক্রান্ত জ্ঞান, মনোভাব ও চর্চা’ বিষয়ে কাজও শুরু করেছিলেন।
ডা. দৃষ্টি শর্মার মৃত্যুর তথ্য শেয়ার করে গবেষণা কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ‘রিসার্চ হেল্প বাংলাদেশে’র প্রতিষ্ঠাতা মোরশেদ আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, ‘উনি বলতেন, ভাই আমি ক্যান্সার নিয়ে সোশ্যাল গবেষণা করতে চাই। ‘তৃণমূল পর্যায়ের নারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার স্ক্রিনিং সংক্রান্ত জ্ঞান, মনোভাব ও চর্চা’ (Knowledge, Attitude, practice of Cervical cancer screening Among female grass root level family planning workers)—এরকম একটা টপিকে কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন। আমি বলতাম, ক্যান্সার নিয়ে তো বিশ্বব্যাপী অনেক গবেষণা হয়। আপনি বরং অন্য টপিকে কাজ করলে সহজ হবে। বলতেন, আমার এই টপিকটাই বেশি পছন্দ।’
মোরশেদ আলম আরও লিখেছেন, ‘শুনলাম ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে উনি মারা গিয়েছেন। নিজে চলে যাওয়ার আগে হয়তো ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য কিছু একটা করে যেতে চাচ্ছিলেন।’
এনএআর/